বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেছেন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন সহজ হবে না। তিনি বলেন, বেশিরভাগ সুপারিশ ইতিবাচক হলেও কিছু প্রস্তাবনা বাস্তবতার সঙ্গে সংগতিপূর্ণ নয়। সাংবাদিকের প্রারম্ভিক বেতন প্রথম শ্রেণির বিসিএস কর্মকর্তার সমান করার প্রস্তাব হলেও তার বাস্তবায়নের উপায় স্পষ্ট নয়। একই একজন মালিকের এক মিডিয়া প্রস্তাবও বাস্তবায়ন কঠিন হবে।
রোববার (২৩ মার্চ) যশোর সার্কিট হাউস মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে অসুস্থ ও অসচ্ছল সাংবাদিকদের কল্যাণ অনুদান এবং সাংবাদিক সন্তানদের বৃত্তির চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জেলার ৫৭ জন সাংবাদিক ও ৭৪ মেধাবী সাংবাদিক সন্তানদের মধ্যে চেক বিতরণ করা হয়।
সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যশোরের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা রেজাউল করিম, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, সাবেক সম্পাদক আহসান কবীর, বিএফইউজের সহকারী মহাসচিব এহতেশামুল হক শাওন, সাবেক সহসভাপতি রাশিদুল ইসলাম, সাবেক সহকারী মহাসচিব নূর ইসলাম প্রমুখ।
মুহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, জুলাই বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকেরা যে স্বাধীনতা পেয়েছেন, তার সঙ্গে দায়িত্বশীলতার বিষয়টি অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হচ্ছে, যা করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের কল্যাণে ট্রাস্ট যে নিরলসভাবে কাজ করছে, তা অনেকেরই পছন্দ হচ্ছে না, ফলে ট্রাস্টের কার্যক্রম ব্যাহত করার ষড়যন্ত্র চলছে, যা সাংবাদিক সমাজ বরদাশত করবে না।
এম আবদুল্লাহ বলেন, সাংবাদিকরা অন্যান্য পেশাজীবীদের মতো নন। সাংবাদিকতা একটি ঝুঁকিপূর্ণ ও অনিশ্চয়তার পেশা। এই পেশার মানুষরা দেশের গণতন্ত্র, জনগণের কল্যাণ ও মানবাধিকারের জন্য কাজ করেন। তাদের জীবনের ঝুঁকি নেওয়ার পরও রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের পাশে দাঁড়ানো।
তিনি বলেন, বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট অত্যন্ত স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করছে। আট মাসে অসুস্থ, অসচ্ছল সহস্রাধিক সাংবাদিকের পাশে দাঁড়িয়েছে ট্রাস্ট।
এছাড়া, পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে দেড় হাজার সাংবাদিক পরিবারের কাছে ইফতার ও ঈদ সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পেশাগত উৎকর্ষ সাধনে ফেলোশিপ চালু করা হচ্ছে এবং প্রবীণ সাংবাদিকদের অবসরকালীন মাসিক ভাতার আওতায় আনার কাজ চলছে।
এম আবদুল্লাহ বলেন, ফ্যাসিবাদ কায়েমে অন্য অনেক পেশাজীবীর মতো সাংবাদিকদেরও ভূমিকা ছিল, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা সেই সময়ে আর ফিরে যেতে চাই না। আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ যেন গোলামির না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
অনুষ্ঠানে যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম বলেন, আমরা সেই সময়ে আর ফিরে যেতে চাই না, যেখানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সংকুচিত হয়েছিল।
খুলনা গেজেট/এএজে